মোনাকো
মোনাকো, পুরো নাম মোনাকো প্রিন্সিপালিটি, ফ্রান্সমাত্র ২.০৮ বর্গকিলোমিটার জায়গা নিয়ে মোনাকো বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম স্বাধীন রাষ্ট্র, শুধু ভ্যাটিকান সিটির পরে। ২০২৪ সালে এখানে ৩৮,৪২৩ মানুষ বাস করে, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্বাধীন দেশে পরিণত করেছে। মোনাকোর সমুদ্র উপকূল বিশ্বের সবচেয়ে ছোট (স্থলবেষ্টিত দেশ বাদে), মাত্র ৩.৮৩ কিলোমিটার। ইতালির সীমানা থেকে এটি প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে, এবং নয়টি প্রশাসনিক এলাকায় বিভক্ত, যার মধ্যে মন্টে কার্লো সবচেয়ে বিখ্যাত।
মোনাকো একটি আধা-সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে চলে, যেখানে প্রিন্স অ্যালবার্ট দ্বিতীয় রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ক্ষমতা নিজের হাতে রাখেন। প্রধানমন্ত্রী সরকারের নেতৃত্ব দেন, যিনি মোনেগাস্ক বা ফরাসি নাগরিক হতে পারেন, তবে নিয়োগের আগে রাজা ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করেন। বিচার বিভাগে ফরাসি ম্যাজিস্ট্রেটরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গ্রিমাল্ডি পরিবার ১২৯৭ সাল থেকে, মাঝে কিছু বিরতি ছাড়া, মোনাকো শাসন করে আসছে। ১৮৬১ সালের ফ্রাঙ্কো-মোনেগাস্ক চুক্তিতে এর স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়, আর ১৯৯৩ সালে মোনাকো জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। স্বাধীনতা ও নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতি থাকলেও, মোনাকোর প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ফ্রান্সের, যদিও এখানে দুটি ছোট সামরিক দলও রয়েছে।
১৯শ শতাব্দীর শেষে মন্টে কার্লো ক্যাসিনো এবং প্যারিসের সঙ্গে রেল সংযোগ মোনাকোর অর্থনীতিকে নতুন গতি দেয়। এর মনোরম আবহাওয়া, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য ও জুয়ার সুবিধা এটিকে ধনীদের কাছে একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ ও বিনোদনের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। আজ মোনাকো একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকিং হাব এবং পরিষেবা খাত ও পরিবেশবান্ধব ছোট শিল্পের দিকে এগিয়ে চলেছে। এটি একটি ট্যাক্স হেভেন; ফরাসি নাগরিক ছাড়া এখানে কেউ ব্যক্তিগত আয়কর দেয় না, আর ব্যবসায়িক করও নগণ্য। এখানকার ৩০%-এর বেশি বাসিন্দা কোটিপতি, আর ২০১৮ সালে জমির দাম বর্গমিটারে €১০০,০০০-এ পৌঁছেছিল। তবে, মোনাকো মানি লন্ডারিংয়ের জন্যও পরিচিত, এবং ২০২৪ সালের জুনে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স এটিকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে।
মোনাকো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়, তবে কাস্টমস ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মতো কিছু ইইউ নীতির সঙ্গে যুক্ত। ফ্রান্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এখানে ইউরোই মুদ্রা। ২০০৪ সালে মোনাকো কাউন্সিল অফ ইউরোপে যোগ দেয় এবং ফ্রাঙ্কোফোনি সংস্থার সদস্য। প্রতি বছর এখানে বিখ্যাত ফর্মুলা ওয়ান মোনাকো গ্রাঁ প্রি রেস হয়। ফ্রান্সের আল্পসে জানুয়ারিতে মন্টে কার্লো র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। মোনাকোর ফুটবল ক্লাব, এএস মোনাকো, ফ্রান্সের লিগ ১-এ খেলে এবং বেশ কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখানকার বাস্কেটবল দল ইউরোলিগে অংশ নায়। সমুদ্র সংরক্ষণ গবেষণায় মোনাকো বিশ্বে স্বীকৃত; এখানে বিশ্বের প্রথম সুরক্ষিত সমুদ্র এলাকা, একটি ওশেনোগ্রাফিক মিউজিয়াম এবং জাতিসংঘের একমাত্র সমুদ্র গবেষণাগার রয়েছে।
এর জনসংখ্যা আনুমানিক ৩২ হাজার। দেশটি ফ্রান্সের দক্ষিণ পূর্বে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। ফরাসি ভাষা বহুল ব্যবহৃত। দেশের প্রধান প্রিন্স আলবার্ট। পর্যটন শিল্প দেশটির প্রধান চালিকা শক্তি। এর প্রধান আকর্ষণ কাসিনো বা জুয়াখেলার আখড়াগুলি। দেশের জনগনকে কোন আয়কর দিতে হয়না।
সরকারীভাবে রাজধানী না থাকলেও সবচেয়ে বিত্তশালী চতুর্থাংশ মণ্টি কার্লোকে মোনাকোর কেন্দ্র বলা হয়। জুয়াখেলার অঙ্কের যে তত্ব প্রযোয্য সেই প্রোবাবিলটি বা সম্ভাবনা তত্বের এক বিখ্যাত পদ্ধতির নাম মণ্টি কার্লো মেথড। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ
-
1
-
2
-
3
-
4
-
5
-
6
-
7
-
8
-
9
-
10
-
11
-
12
-
13
-
14
-
15
-
16
-
17
-
18
-
19
-
20