ঋগ্বেদ
থাম্ব|300px|[[দেবনাগরী লিপি|দেবনাগরী লিপিতে ''ঋগ্বেদ'' (পদপাঠ) পুথি, ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ। মঙ্গলাচরণের (''গণেশায় নমঃ ওঁ'') পর প্রথম পদের প্রথম ঋকটি (''অগ্নিমীলে পুরোহিতং যজ্ঞস্য দেবমৃত্বিজম্। হোতারং রত্নধাতমম্।।'') লিখিত। স্বরগ্রাম-প্রস্বনগুলি লাল রঙের নিম্নরেখা ও উল্লম্ব ঊর্ধ্বরেখা দ্বারা চিহ্নিত।]] ঋগ্বেদ (সংস্কৃত: ', ' "স্তব" ও '''' "জ্ঞান" থেকে) হল প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক সংস্কৃত স্তোত্রাবলির একটি সংকলন। বেদের চারটি খণ্ডের মাঝে প্রথম অংশটি ঋগ্বেদ। এটি সনাতন ধর্মের আদি উৎস। এটি বিশ্বের প্রথম গ্রন্থগুলোর মধ্যে একটি, যা আজ পর্যন্ত কোনো না কোনো ভাবে সমাজে টিকে রয়েছে। এই গ্রন্থই সনাতন ধর্মের মূল পাঠ।ঋগ্বেদ গ্রন্থের চারটি স্তর লক্ষিত হয়। যথা: "সংহিতা", "ব্রাহ্মণ", "আরণ্যক" ও "উপনিষদ্"। "ঋগ্বেদ সংহিতা" অংশটি হল এই গ্রন্থের মূল অংশ। এই অংশে দশটি "মণ্ডল"-এ (খণ্ড) ১,০২৮টি "সূক্ত" (স্তোত্র) সংকলিত হয়েছে এবং সব ক’টি সূক্তে মোট মন্ত্রের (ঋগ্বেদে মন্ত্রগুলিকে "ঋক" বলা হয়, যার নামকরণ "ঋগ্বেদ" নামের অনুসারে করা হয়েছে) সংখ্যা ১০,৫৫২। দশটি মণ্ডলের মধ্যে দ্বিতীয় থেকে নবম মণ্ডল পর্যন্ত অংশটিই প্রাচীনতম। এই অংশে সংকলিত সূক্তগুলিতে বিশ্বতত্ত্ব ও দেবতাদের স্তবস্তোত্রাদি আলোচিত হয়েছে। অপেক্ষাকৃত নবীনতর মণ্ডল দু’টির (প্রথম ও দশম মণ্ডল) সূক্তসমূহে আলোচ্য বিষয় হল দর্শন ও অনুমানমূলক প্রশ্নাবলি, সমাজে দানের মতো সদ্গুণাবলি, মহাবিশ্বের উৎপত্তি-সংক্রান্ত প্রশ্নাবলি এবং ঈশ্বরের প্রকৃতি, এবং অন্যান্য অধিবিদ্যামূলক বিষয়াবলি। ঋগ্বেদে, ত্র্যম্বক-মন্ত্র বা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র (৭.৫৯.১২ ) মৃত্যু প্রতিরোধ করার জন্য বর্ণিত হয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত গায়ত্রী মন্ত্রও (ঋ০ ৩.৬২.১০ ) এর মধ্যেও উল্লেখ আছে। ঋগ্বেদে, অনেক ধরনের লোক-উপযোগী-সূক্ত, দর্শন-সূক্ত, সংস্কার-সূক্ত রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, রোগ-প্রতিরোধ-সূক্ত (ঋ০ ১০.১৩৭.১-৭), শ্রী সূক্ত বা লক্ষ্মী সূক্ত (ঋগ্বেদের পরিশিষ্ট সূক্তের খিলসুক্তে), দর্শনের নাসাদিয়-সুক্ত (ঋ০ ১০.১২৯.১-৭) এবং হিরণ্যগর্ভ সূক্ত ( ঋ০ ১.১২১.১-১০) এবং বিবাহ ইত্যাদি সূক্তগুলি (আর. ১০.৮৫.১-৪৭) বর্ণিত হয়েছে, যেগুলিতে জ্ঞান বিজ্ঞানের চূড়ান্ত পরিণতি দৃশ্যমান।
ঋগ্বেদ হল বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় লিখিত প্রাচীনতম গ্রন্থ। এটির আদি স্তরগুলি হল যে কোনও ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষায় লিখিত প্রাচীনতম অদ্যাবধি অস্তিত্বমান গ্রন্থের অন্যতম।}} খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দ থেকে ঋগ্বেদের ধ্বনি ও পাঠ মৌখিকভাবে পরম্পরাগতভাবে প্রচলিত ছিল। সাংস্কৃতিক ভাষাতত্ত্ব ও ভাষাবিজ্ঞান-সংক্রান্ত ইঙ্গিত করে যে ঋগ্বেদ সংহিতার বৃহদংশ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ১২০০ অব্দের মধ্যবর্তী সময়কালে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে (বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চলে) রচিত হয়েছিল। যদিও কোনও কোনও গবেষক আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ থেকে ১১০০ অব্দের মধ্যবর্তী এক বৃহত্তর সময়কালকে ঋগ্বেদ সংহিতা রচনার তারিখ হিসেবে গ্রহণ করেন।
ঋগ্বেদের কয়েকটি ঋক ও সূক্ত হিন্দু সামাজিক অনুষ্ঠান (যেমন বিবাহ) ও প্রার্থনার সময় পঠিত হয়। এই কারণে ঋগ্বেদ সম্ভবত পৃথিবীর প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ যা এখনও ব্যবহৃত হয়ে চলেছে।
ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকেও এই বইটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইরানি আবেস্তার স্তোত্রগুলি ঋগ্বেদের শ্লোকের অনুরূপ রয়েছে, যা অগ্নি, বায়ু, জল, সোম ইত্যাদির মতো বিভিন্ন ভারতীয় দেবতার বর্ণনা করে। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ
-
1
-
2
-
3